দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করার কার্যকারী উপায়

দ্রুত ওজন বৃদ্ধির উপায় খুঁজছেন? তাহলে এই ব্লগটি হতে পারে আপনার জন্য একটি কার্যকারী ব্লগ। এই ব্লগে থাকছে স্বাস্থ্যসম্মত ও কার্যকর পদ্ধতিগুলো। সঠিক লাইফ স্টাইল, প্রতিদিনের খাবারের অভ্যেসে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করা যায়।

নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা,চিন্তা মুক্ত জীবন যাপন ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক। দ্রুত ওজন বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে এখনই পড়ুন আমাদের পুরো ব্লগটি। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য এ ব্লগ।

সূচিপত্রঃ দ্রুত ওজন বৃদ্ধির উপায়

দিনে ৫-৬ বার খাবার খাওয়ার উপকারিতা 

ওজন বৃদ্ধির আশায় অনেকে একবার দুইবারে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলে, কিন্তু এই পদ্ধতি সঠিক নয়। দিনে ৫-৬ বার খাবার খাওয়া হলো ওজন বৃদ্ধি করা একটি কার্যকরী উপায়। বারবার খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ক্যালোরি গ্রহণ করতে পারে। অনেকেই একসাথে ভারী খাবার খেয়ে ফেলেন, যার ফলে শরীর একবারে অনেকটা ক্যালরি নিয়ে নেয় যা শরীরের জন্য অতি ক্ষতিকর। তাই দিনের মধ্যে অল্প অল্প করে ৫-৬  বার খাবার খাওয়া উচিত। 

একাধিক খাবার গ্রহণের মাধ্যমে আপনি আপনার শরীরের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদানগুলো পেতে পারেন। সকালে খাবারের সাথে বাদাম, দই, ছোলা, ফল গ্রহণ  করা উচিত। আগে কিছু ক্যালরি যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত, যার মাধ্যমে শরীরে প্রোটিন এবং ক্যালরি গ্রহণ নিশ্চিত করা যেতে পারে। একেবারে সব ক্যালরি গ্রহণ না করে শরীরে ক্যালরি ধীরে ধীরে দেওয়া উচিত। যা শরীর সঠিকভাবে শোষণ করতে পারে এবং আমাদের ওজন বৃদ্ধি করতে পারে। 

তবে স্ন্যাকস হিসেবে জাঙ্ক ফুড খাওয়া উচিত নয়। শাকসবজি, বাদাম, দই, ফলমূল, মাখনসহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। যা আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি এবং পুষ্টি দিবে। এভাবে সঠিক নিয়মে দিনে নিয়মিত চার পাঁচ বার আর খাবার খাওয়া অভ্যেস গড়ে তুলুন এবং আপনার দ্রুত ওজন বৃদ্ধির পরিকল্পনাকে আরো কার্যকর করে তুলুন। 

সঠিক খাবার খাওয়ার পরিকল্পনা করুন 

আপনি যখন দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে চাইবেন, তখন সবার প্রথমে দরকার সঠিক খাবার খাওয়ার পরিকল্পনা করা। সঠিক খাবার খাওয়ার পরিকল্পনার মাধ্যমে আপনার শরীরে পুষ্টি, ক্যালরি, প্রোটিন শোষণ করবে যা আপনাকে ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখতে হবে। যাতে শরীরে সমান ভাবে মিনারেল, ভিটামিন, প্রোটিন, পাওয়া যায়। 

এছাড়া প্রতিটি খাবারের পরিমাণ সঠিক হওয়া উচিত। যখন আপনি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হয়ে আপনার বয়স আপনার উচ্চতা অনুযায়ী খাবারের পরিমাণ  কমবেশি করবেন তখন আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি পাবেন না। যখন আপনি কম খাবেন আপনার শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন ও পুষ্টি শোষণ করতে পারবেনা। আবার যখন আপনি বেশি খাবার খাবেন আপনার শরীর প্রয়োজনের তুলনায় বেশি শোষণ করবে। যা আপনাকে পরবর্তী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। তাই প্রতিটি মানুষের বয়স, উচ্চতা অনুযায়ী খাবারের পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত। 

আপনি যখন আপনার ওজন বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থির, তখন আপনার প্রথম পরিকল্পনা হবে সঠিক পরিমাণে, সঠিক খাবার গ্রহণ করার তালিকা তৈরি করা। আপনি সকালে কি খাবার খাবেন, কতটা ক্যালরি গ্রহণ করবেন, দুপুরে কতটা খাবার খাবেন খাবেন পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত এই সবকিছু যথাযথ পরিকল্পনা খাবার গ্রহণ করা উচিত। তাছাড়া সুস্থ স্বাভাবিক থাকতে গেলে প্রতিটা মানুষের খাবারের পরিকল্পনা করা উচিত। 

সঠিক নিয়মে পানি পান করুন 

পানির অপর নাম জীবন। আমরা সবাই জানি। যেমন প্রতিদিন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানিগ্রহণ করা উচিত। যে তেমনি সঠিক নিয়মে পানি পান করাও গুরুত্বপূর্ণ। পানি আমাদের শরীরে শুধু ডিহাইড্রেশন বজায় রাখে না খাবার হজম হতেও সাহায্য করে। যা আমাদের পরিপাক ক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে। 
আমাদের শরীরে কম পানি পান করা আমাদের শরীরের কার্যক্রম বাধা দিতে পারে। যার ফলে বিভিন্ন অসুস্থতায় আমরা বুঝতে পারি। 

দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে পানি পান করা একটি কার্যকরী উপায়। যখন দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আপনারা ক্যালরি যুক্ত খাবার গ্রহণ করে সেক্ষেত্রে শরীরে ক্যালরি রসুনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত। তা না হলে শরীরে হজম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ওজন বৃদ্ধির লক্ষ্যে যখন বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়া হয় তখন আপনাদের উচিত বেশি পরিমাণে পানি পান করা। যাক খাবার হজমে সাহায্য করে, শরীরকে শীতল রাখে এবং অতিরিক্ত ক্যালরি জমতে প্রদান করে। যার ফলে আপনার ওজন বাড়ে কিন্তু আপনার মেদ বৃদ্ধি পায় না। 

পানি পানি করার ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাণ বজায় রাখতে হবে। কম পরিমাণে পানি পান করা যেমন আমাদের শরীরকে পানি শূন্যতায় ভোগায় তেমনি অতিরিক্ত পানি পান করার ফলে দ্রুত খাবার হজম কিংবা খাবার হজমে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে গড়ে তিন থেকে ছয় লিটার পানি খাওয়া উচিত। তাই পানি পান করার ক্ষেত্রে সঠিক রাখুন, মনে রাখবেন পানি কিন্তু আমাদের শরীরে পুষ্টি শোষণ করতে সাহায্য করে। তাই সঠিক নিয়মে পানি পান করা উচিত। 

ভিটামিন ও মিনারেল গ্রহণ করুন 

সুস্থ স্বাভাবিক থাকতে হলে আমাদের প্রয়োজন ভিটামিন বিভিন্ন খাদ্য উপাদান। শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল। ওজন বৃদ্ধির জন্য কেবল ক্যালরি বৃদ্ধি করলেই হবে না, শরীরে ক্যালরির সাথে সাথে প্রয়োজন ভিটামিন মিনারেল। ভিটামিন বিষেষ করে প্রোটিন ও ক্যালরির সাথে মিশে শরীরের গঠন বজায় রাখে এবং ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও মিনারেল যেমন ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম আয়রন ইত্যাদি শরীরের শক্তি ও বেশি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের শরীরে ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায় আমাদের কিছু খাদ্যাভ্যাস  প্রয়োজন। শাকসবজি, ডিম, দুধ, বাদাম, মাংস, বিভিন্ন ধরনের ফল, এই খাবারগুলি নিয়মিত খেলে ওর শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে এবং আমাদের শরীরে ক্যালরির সাথে ভিটামিন ও মিনারেল যুক্ত হয়ে ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। যা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে ওজন বৃদ্ধি করবে। 
ভিটামিন এবং মিনারেলের মাধ্যমে শরীরে বিভিন্ন কার্যক্রম যেমন কোষ বৃদ্ধি শক্তির উৎপাদন ও সঠিক হরমোনাল কার্যক্রম পরিচালিত হয়। আপনি যখন প্রাকৃতিকভাবে ওজন বৃদ্ধি করতে চাইবেন তখন আপনার প্রয়োজন প্রাকৃতিকভাবে শরীরে ক্যালোরি ও প্রোটিন যুক্ত করা। যা আপনাকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। তাই ওজন বৃদ্ধির জন্য পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের মাধ্যমে ভিটামিন ও মিনারেল গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। 

নিয়মিত ব্যায়াম করুন ও পর্যাপ্ত ঘুমান 

দ্রুত ওজন বৃদ্ধির উপায় গুলোর মধ্যে শুধুমাত্র খাবার গ্রহণ করলেই চলবে না। নিয়মিত শরীর চর্চা প্রয়োজন। শুধুমাত্র ক্যালোরি গ্রহণ বাড়ানো যথেষ্ট নয়। শরীরের পেশী বৃদ্ধি এবং শারীরিক গঠন বজায় রাখতে হবে। শরীরের পেশি বৃদ্ধি ও শারীরিক গঠন বজায় রাখার জন্য একমাত্র কার্যকরী উপায় হচ্ছে ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম একজন মানুষকে সুস্থ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরে ক্যালরি খরচ ও বাড়ে এবং অতিরিক্ত মেদ জমতে বাধা প্রদান করে। যা পেশি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

আপনি যদি চান দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে, তাহলে  অতিরিক্ত ক্যালরি ও প্রোটিন গ্রহণের পাশাপাশি নিয়মিত শরীর চর্চা করা প্রয়োজন। যখন আপনি ব্যায়াম করবেন আপনার পরিশ্রম হবে ক্যালোরি খরচ হবে, ক্ষেত্রে আপনার শরীরে প্রয়োজন হবে আরো ক্যালোরি, যা আপনাকে দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। বিভিন্ন শারীরিক ব্যায়াম যেমন, ডাম্পেল, বডি ওয়েট এক্সারসাইজ, পুষ-আপ ইত্যাদি পেশি গঠনে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত মেদ জমতে বাধা দেয়। যা আপনার শরীরকে ওজন বৃদ্ধির পথকে ফলপ্রসূ করে। 

যদি আপনি ভালোমতো ঘুমাতে না পারেন, তাহলে আপনার শরীর সঠিকভাবে পুষ্টি শোষণ করতে পারে না এবং ওজন বৃদ্ধিতে বাধা প্রচার করে। এইজন্য প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানো উচিত। খুব আমাদের শরীরে মানসিক ও শারীরিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ঘুম ওদের শরীরকে সুস্থ রাখে পেশি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ঘুমের শরীরে বিভিন্ন হরমোনাল পরিবর্তন ঘটে যা আমাদের পেশি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পেশি বৃদ্ধি করলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পাবে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো উচিত। 

শরীরে প্রয়োজনীয় ফ্যাট গ্রহণ করুন 

দ্রুত ওজন বৃদ্ধির উপায় শুধু ক্যালোরি প্রোটিন নয়, আমাদের ফ্যাট ও প্রয়োজন। ফ্যাট আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি প্রদান করে। তাই আমাদের সঠিক ফ্যাট গ্রহণ করা উচিত যা আমাদের শরীরের শক্তি প্রদানের পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। আপনি যদি সঠিক ফ্যাট গ্রহণ করেন তাহলে আপনার শরীরে শক্তির পাশাপাশি ওজন  বৃদ্ধি হবে। তবে ফ্যাট গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের প্রাকৃতিক উপায়ে পাওয়া ফ্যাট গ্রহণ  করতে হবে। তা না হলে আমরা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগতে পারি। 

বাদাম, মাখন, অলিভ অয়েল, সূর্যমুখী তেল, নারিকেল তেল ইত্যাদি সুস্বাস্থ্যকর ফ্যাটের উৎস। এইসব ফ্যাট গুলো শরীরে প্রয়োজনীয় ফ্যাট  গ্রহণে সাহায্য করে এবং সুস্থভাবে ওজন বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। তবে এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে অতিরিক্ত ফ্যাট যেন শরীরে না জমে। কারণ অতিরিক্ত ফ্যাট অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই আমাদের উচিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্যাট গ্রহণ করা। সঠিক নিয়মে, সঠিক পরিমাণে, প্রাকৃতিক উপায়ে পাওয়া ফ্ল্যাট গুলো গ্রহণ করা। কৃত্রিম উপায়ে পাওয়া ফ্ল্যাট গুলো এর ফলে হয় ঠিকই কিন্তু আমাদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায়। তাই উচিত প্রাকৃতিকভাবে সুস্বাস্থ্যকর ফ্যাট গ্রহণ করা। যা আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি প্রদানের সাথে সাথে ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। 

ক্যালরি যুক্ত খাবার বেশি খান 

শরীরের ওজন বাড়ানোর প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হচ্ছে ক্যালরির যুক্ত গ্রহণ করা। যদি আপনি প্রতিদিন খাবারের সাথে প্রয়োজনীয় ক্যালোরির চেয়ে অতিরিক্ত বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খান, তাহলে আপনার ওজন বৃদ্ধি সম্ভব। তবে ক্যালরি বেঁধে ক্ষেত্রে যে বিষয়টি বেশি খেয়াল রাখা উচিত তা হলো খাবারের পুষ্টিগুণের ওপর নজর রাখা। ক্যালোরি বৃদ্ধি করতে গিয়ে খাবারের পুষ্টিগুণ যেন নষ্ট না হয়।

কেবলমাত্র অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ নয় বরং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ভিটামিন মিনারেল বাড়ানো। এজন্য সুস্বাস্থ্য জন্য তাজা শাকসবজি, ফলমূল,বাদাম, ঘী, আলু, খাবারগুলো সেরা পছন্দ হতে পারে। এই খাবারগুলো গ্রহনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে আমাদের শরীরে ক্যালরিযুক্ত হবে এবং অতিরিক্ত মেদ জমবে না। যা আমাদের সুস্বাস্থ্য ভাবে ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। তাই প্রতিদিন এর খাবারের তালিকায় ওজন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্যালরিযুক্ত খাবার খান এবং দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করুন। 

অতি দ্রুত ফলাফল আশা করবেন না 

যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে ধৈর্য ধারণ করা জরুরী। কথায় আছে 'ধৈর্যের ফল মিষ্টি হয়।' নিজে কাজ শুরু করেন না কেন যদি দ্রুত ফলাফল আশা করেন এক্ষেত্রে আপনার সেই কাজটি হতাশার কারণ হতে পারে। ঠিক তেমনি ওজন বাড়ানোর প্রক্রিয়া দ্রুত হতে পারে না, এটি শরীরে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। পর্যাপ্ত পরিমাণে সময় দিতে হবে ওজন বৃদ্ধির জন্য।  যা আপনাকে সুস্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। কোন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলবে না। যখন অতি দ্রুত ফলাফল আশা করতে যাবেন খেতে দুশ্চিন্তা বাড়বে এতে ওজন বৃদ্ধির বদলে ওজন কমবে। 

ওজন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া একটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তার জন্য প্রথমে শক্ত মনোবল, সঠিক পরিকল্পনা ও ধৈর্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। যদি আপনি নিয়মিত ও ধারাবাহিকভাবে আপনার খাদ্যাভাস, ব্যায়াম, লাইফ স্টাইল চালিয়ে যান তবে এক সময় আপনি নিশ্চয়ই সফল হবেন। তাই অতি দ্রুত ফলাফল লাভের আশায় ভুলভাল কিছু করবেন না যা আপনাদের ওজন বৃদ্ধির বদলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে।  তাই নিজেকে সময় দিন এবং সফলতার জন্য মনোযোগী হন। 

নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিহার করুন 

নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণের ফলে আমরা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় পড়তে পারি। নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণের ফলে আমাদের প্রথম যে ক্ষতিটি হয় অনিয়মিত ঘুম। যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই ওজন বাড়ানোর প্রক্রিয়া নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করবে। তামাক ও অ্যালকোহল আমাদের শরীরের জন্য তো ক্ষতিকর, যা আমাদের শরীরে পুষ্টি গ্রহণ করতে বাধা প্রদান করে। যার ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় পড়তে হয়। 
অ্যালকোহল ক্যালরি সমৃদ্ধ হলেও শরীরে চর্বি জমতে সাহায্য করে। আর চর্বি জমা মানে আমাদের শরীরের নানা রোগের বাসা বাধানো। তাই বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই সকল নেশা জাতীয় দ্রব্য আপনাদের জীবন থেকে হবে। বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার প্রভাব মুক্ত থাকতে হলে আপনাকে নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণের অভ্যাস পরিহার করতে হবে। এতে করে আপনার শরীরের ওজন বাড়ানোর প্রক্রিয়া আরো দ্রুত ও স্বাস্থ্যকর হবে। যা আপনাকে সুস্বাস্থ্য সাহায্য করবে। 

স্মুদি ও স্বাস্থ্যকর নাস্তা গ্রহণের উপকারিতা 

বর্তমানে দ্রুত ওজন বৃদ্ধির উপায় গুলোর মধ্যে স্মুদি খাওয়া একটি জনপ্রিয় উপায় হয়ে উঠেছে। প্রোটিন সমৃদ্ধ বিভিন্ন ধরনের পানীয় শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী হতে পারে। আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে প্রোটিন ও ক্যালরিযুক্ত পানিও বানিয়ে নিতে পারেন।যা আপনাকে প্রাকৃতিকভাবে ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। আপনি বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক ফল, দুধ, বাদাম, বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে প্রোটিন যুক্ত একটি পানীয় তৈরি করতে পারেন। যা আপনাকে স্বাদের সাথে সাথে শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।  স্মুদি খুবই সুস্বাদু হয়। যার ফলে এটি খাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন বেগ পেতে হয় না। 

এই ধরনের স্মুদি সহজে হজম হয় এবং শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। মিষ্টি খাবারের চেয়ে শরীরের জন্য এ সমস্ত পানীয় বেশি উপকারী। বিশেষ করে সকালে বা সন্ধ্যায় বেশি ক্যালরি ও প্রোটিন যুক্ত  স্মুদি গ্রহণের ফলে আপনার শরীরকে আরও বেশি শক্তিশালী ও পুষ্টি সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে। বিভিন্ন বডি বিল্ডার বিভিন্ন ধরনের স্মুদি খেয়ে থাকেন যা তাদের ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই আপনিও নিয়মিত স্মুদি খান এবং স্বাস্থ্যকর ভাবে বৃদ্ধি করুন।

স্বাস্থ্যকর নাস্তা দুজন বৃদ্ধির জন্য কারী পদ্ধতি। স্নাক্স খাওয়া অধিকাংশ মানুষকে বাড়তে ক্যালোরি গ্রহণের সুযোগ করে দেয়। কিন্তু নাস্তার ক্ষেত্রে আপনার খাবারটি হতে হবে স্বাস্থ্যকর শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও ক্যালোরি গ্রহণ করতে পারেন। স্বাস্থ্যকর নাস্তাগুলোর মধ্যে হতে পারে বাদাম, দই, ফল, টোফু বিভিন্ন ধরনের প্রোটিনবার ইত্যাদি খাবারগুলো আপনি সকাল বিকাল রাস্তা হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন যা আপনাকে দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

এ ধরনের খাবার মাধ্যম আপনি খুব সহজেই ক্যালোরি গ্রহণ করতে পারেন এ জন্য উপকারী।এই ধরনের খাবার আপনার শরীরের শক্তি বজায় রাখার পাশাপাশি ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ বাড়াবে। তবে এইসব স্নাক্স  খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার খাবারের পরিমাণ নিঞ্চনের রাখা গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না। এটি অতিরিক্ত খেলে জন্য হতে পারে ক্ষতিকর। মাছ খাওয়ার পাশাপাশি খাবারের পরিমাণও সঠিক মাপতে হবে। এর মাধ্যমে আপনি সুস্থভাবে ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন। 

উপসংহারঃ দ্রুত ওজন বৃদ্ধির উপায় 

দ্রুত ওজন বৃদ্ধির উপায় জানতে হলে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সঠিক ব্যায়াম, সঠিক ডায়েট। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার রাখতে হবে। ডিম, দুধ, বাদাম, ঘি, মাখন, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এছাড়াও প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া, দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা। যা আপনাকে সুস্থ জীবন যাপনের সাথে সাথে ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। 

যারা খুব দ্রুত ওজন বাড়াতে চান তারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়, উচ্চপ্রটিন যুক্ত শেক, বাড়তি ক্যালরিযুক্ত খাবার, সময় মত খাবার খাওয়া, পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া। রুটিন মাফিক জীবন পরিচালনা করা। অতিরিক্ত তেল চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করা, তামার জাতীয় দ্রব্যের থাকলে সেগুলো পরিহার করে নতুন নিয়মে জীবন পরিচালনা করতে হবে। ওজন বাড়ানোর ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলে প্রাকৃতিকভাবে শরীরে ওজন বৃদ্ধি করে। সবশেষে বলা যায় স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ওজন বাড়াতে হলে ধৈর্য ও নিয়ম মেনে চলা জরুরী। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url